বাসনা সবসময়ই অন্যের উপর নির্ভরশীল। কারন, বাসনার বস্তুটি এখানে অদৃশ্য; আমরা জানি না কিসের জন্য এই বাসনা। অন্যভাবে বললে, বাসনা সবসময়ই অন্যের বাসনা; অন্যের চোখে গ্রহনযোগ্য হয়ে ওঠাই আমার বাসনা। বাসনার বস্তুটি অজানা বলে বাসনা কিন্তু থেমে নাই; বাসনার চরিত্রটিই হল এক গভীর অভাববোধ। তাই বাসনার দরকার হয় এষণা (জ্ঞান) যা মতাদর্শের আদলে সমাজ-রাজনীতির বয়ান হয়ে হাজির হয়। যেমন পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় অবিরত পন্যভোগের সবারিত ডাক প্রতিনিয়ত আমাদের হাতছানি দেয়। ভোগেই যেন মুক্তি, এমনকি সম্ভোগেও। সেকারণেই নারীও হয়ে ওঠে পন্য। এমনকি আমরা হয়ে উঠি পন্যপুজারী; যতই ভোগ আর সম্ভোগ করি না কেন অতৃপ্তি থেকেই যায় – এটাই বাসনার স্বভাবগুন। আমাদের অনেক প্রগতিশীল বা কথিত বাম বুদ্ধিজীবি ও রাজনীতিবিদরাও এই ব্যাপারটির গভীরতা উপলব্ধি করতে পারেন না। নারীর এই পন্য না-হয়ে উঠতে পারার মধ্যেই যে নারীমুক্তি রয়েছে তাও ঠিক নয়। ধর্মীয় মৌলবাদীরা নারীকে যেভাবে বন্দী করতে চায় তার নিহিত উদ্দেশ্য ঐ ভোগ-সম্ভোগ। অর্থাৎ পন্য না করেও নারীকে সম্ভোগ করা যায়। সে জন্যই ধর্মের দোহাই লাগে; নীতি-নৈতিকতার এক মানদন্ড লাগে, আল্লাহ বা নবী-রসূলের অজুহাত লাগে, (ধর্ম)জ্ঞান-কেন্দ্রিক বিচার লাগে।