প্রযুক্তিগত পুনরুৎপাদনযোগ্যতার যুগে শিল্পকলার ভূমিকা (পর্ব ৫) / ওয়াল্টার বেনিয়ামিন

শিল্পকর্মের স্বাতন্ত্র্য অভিন্ন হয়ে ওঠে ঐতিহ্যের প্রেক্ষিতের ভিতর নিহিত থেকে। অবশ্যই এই ঐতিহ্য নিজেই পুরোপুরি জীবিত এবং অত্যন্ত পরিবর্তনশীল। যেমন, ভেনাসের একটি প্রাচীন মূর্তিতে গ্রীক চিরাচরিত ঐতিহ্যের যে প্রেক্ষাপট বিদ্যমান (যারা এটিকে উপাসনার বস্তু হিসাবে তৈরি করেছিল), তা মধ্যযুগীয় খ্রীষ্টীয় যাজকদের প্রেক্ষাপট (যারা এটিকে একটি দুষ্টু প্রতিমা হিসাবে দেখেছিল) থেকে ভিন্ন। কিন্তু উভয় ক্ষেত্রে যা […]

যদি ঈশ্বর থাকে, তবে যে কোনো কিছুই অনুমোদিত / স্লাভোয় জিজেক

“যদি ঈশ্বর না-থাকে, তাহলে সবকিছুই অনুমোদিত” এই বক্তব্যটি যদিও দস্তয়ভস্কির ‘দ্য করামাজভ ব্রাদার্স’ উপন্যাসে আছে এমন ধারণাই সবচেয়ে বেশী (সার্ত্রে তাঁর ‘বিয়িং অ্যান্ড নাথিংনেস’ বইয়ে সে-রকমই প্রথম করেছিলেন), আসলে তা ঠিক নয়। বিশেষখ্যাত এই বচনের সবচেয়ে কাছাকাছি কয়েকটি উদাহরণ আছে মাত্র, যেমন, রাকিতিনের সাথে বিতর্কে দিমিত্রির দাবী (যখন সে আলিওশাকে বলছিলো):      ‘কিন্তু তখন মানুষের কি […]

প্রযুক্তিগত পুনরুৎপাদনযোগ্যতার যুগে শিল্পকলার ভূমিকা (পর্ব ৪) / ওয়াল্টার বেনিয়ামিন

৩. দীর্ঘ ঐতিহাসিক সময়কালে যেমন মানুষের যৌথ অস্তিত্বের পুরা ধরণ পরিবর্তিত হয়, তেমনি তাদের উপলব্ধির পদ্ধতিটিও। মানুষের উপলব্ধি যেভাবে সংগঠিত হয় এবং যার মাধ্যমে তা ঘটে তা কেবল প্রকৃতি নয় ইতিহাস দ্বারাও নিয়ন্ত্রিত। জনমানুষের অভিবাসনের যুগে যখন মানুষ দেখেছে শেষ দিকের রোমান শিল্পকলার খাত এবং ভিয়েনা জেনেসিসের উত্থান যা কেবল প্রাচীনকালের শিল্পকলার চেয়ে আলাদা নয়, […]

প্রযুক্তিগত পুনরুৎপাদনযোগ্যতার যুগে শিল্পকলার ভূমিকা (পর্ব ৩) / ওয়াল্টার বেনিয়ামিন

২. এমনকি সবচেয়ে নিখুঁত পুনরুৎপাদনেও একটি জিনিসের অভাব পরিলক্ষিত হয়ঃ শিল্পকর্ম সৃষ্টির সেই সময় এবং স্থান – কোনো নির্দিষ্ট স্থানে তার অস্তিত্বের অনন্যতা। এই অনন্য অস্তিত্বই, অন্য আর কিছুই নয়, যা শিল্পকর্মের প্রাসঙ্গিকতার ঐতিহাসিক নিদর্শন। এই ইতিহাস তার মালিকানার পরিবর্তনসহ সময়ের সাথে সাথে শিল্পকর্মের শারীরিক গঠনে পরিবর্তনগুলি ধরে রাখে৩। শারীরিক গঠনে পরিবর্তনগুলির চিহ্নগুলি কেবল রাসায়নিক […]

জ্ঞানের আলোকায়ন কি? / ইম্যানুয়েল কান্ট

জ্ঞানের আলোকায়ন হলো মানুষের নিজের উপর আরোপিত অপরিণত দশা থেকে জেগে ওঠা, আর অপরিণত দশা হলো অন্যের কর্তাগীরি ছাড়া নিজের বোধ-বুদ্ধিকে ব্যবহার করতে না-পারার অক্ষমতা। বুঝতে না-পারার অক্ষমতা নয় বরং অন্যের কর্তাগীরি ছাড়া সমস্যা সমাধানের যোগ্যাতা বা সাহসের অভাবই হলো এই অপরিণত দশা আরোপিত হওয়ার কারণ। আলোকায়নের আদর্শবানী হলঃ জানার সাহস রাখো! নিজের উপলদ্ধিকে ব্যবহার […]

প্রযুক্তিগত পুনরুৎপাদনযোগ্যতার যুগে শিল্পকলার ভূমিকা (পর্ব ২) / ওয়াল্টার বেনিয়ামিন

১. নীতিগতভাবে, শিল্পকর্ম সবসময়েই পুনরুৎপাদনযোগ্য। মানুষের তৈরি যে কোনো জিনিসের অনুলিপি আরেকজন মানুষ করতে পারে। যুগ যুগ ধরে শিক্ষার্থীরা তাদের নৈপুণ্য অনুশীলনের জন্য, শিক্ষাগুরুরা তাদের কর্মের বিস্তারের জন্য এবং অবশেষে তৃতীয় আর একটি পক্ষ যারা লাভের জন্য অনুলিপি বা প্রতিলিপি তৈরি করেছে। তবে শিল্পকর্মের প্রযুক্তিগত পুনরুৎপাদন নতুন একটা কিছু। ইতিহাসে বড় বড় ব্যবধানে বিরতি দিয়ে […]

প্রকাশনা শিল্পের সমালোচনা / ওয়াল্টার বেনয়ামিন

নিজেদের সামাজিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে লেখকরা পিছিয়ে পড়া জনসংখ্যার মধ্যে সবচেয়ে পিছনে। তারা কেবল একে অপরকে সহকর্মী হিসাবে বিবেচনা করে; নিজেদের সিদ্ধান্ত গঠন এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য তাদের প্রস্তুতি পদমর্যাদায় উপরে যারা তাদের প্রতি যেমন তার চেয়ে বেশী পদমর্যাদায় যারা নীচে যারা তাদের দিকেই তৎপর। তারা কখনও কখনও প্রকাশকের কাছ থেকে ভাল চুক্তি আদায় […]

প্রযুক্তিগত পুনরুৎপাদনযোগ্যতার যুগে শিল্পকলার ভূমিকা (পর্ব ১) / ওয়াল্টার বেনিয়ামিন

(মার্চ বা এপ্রিল ১৯৩৯ সালে রচিত; বেনিয়ামিনের জীবদ্দশায় অপ্রকাশিত। ইংরাজি অনুবাদঃ হ্যারি জোহান এবং এডমন্ড জেফকোট। এটি তৃতীয় সংস্করণ থেকে বাংলায় অনুদিত। বেনিয়ামিন ১৯৩৬ সালের প্রথম দিকে ফরাসী ভাষায় অনুবাদসহ একটি জার্মান সাময়িকীতে প্রকাশের ইচ্ছায় প্রবন্ধটি ফ্রান্সে বসে শেষ করেছিলেন। গ্রেটেল অ্যাডর্নোকে অনুলিপি করার অনুমতি দেওয়ার আগে তিনি দুই বছরে অসংখ্য পরিবর্তন পরিবর্ধন করেছিলেন। ১৯৩৯ […]

আপনি এখান থেকে কপি করতে পারবেন না!